স্বদেশ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে নিজেকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা দাবি করায় রবিউল ইসলাম সোহাগ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাব্বিরুল আহসান ছবি মারা যান। তার মৃত্যুর পর ওই পদটি শূন্য ছিল। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জাল করে সোহাগ নিজেকে ওই পদে নিযুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন। এর প্রমাণ স্বরূপ তিনি গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের সামনে ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত ও সিলযুক্ত একটি কাগজ প্রদর্শন করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরের বিষয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর ফিজার ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করে বিষয়টি জানতে চান। এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেছেন “আমি জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশ বা মতামত ছাড়া কাউকে অর্ন্তভুক্ত করার গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পারি না এবং এ ধরনের স্বাক্ষরিত কাগজ প্রদান করিনি। যদি সোহাগ এ ধরনের কাগজ প্রদর্শন করে তবে ওই কাগজ সম্পূর্ণ জাল বলে গণ্য হবে।’
মামলার বাদী আরও বলেন, ‘এ ছাড়া রবিউল ইসলাম সোহাগ নামে কাউকে তিনি চেনেন না জানিয়ে এ ধরনের ভুয়া সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ প্রদর্শন হয়ে থাকলে থানায় মামলা করার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। এ নির্দেশ পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের পরামর্শক্রমে শুক্রবার সকালে কোতোয়ালি থানায় রবিউল ইসলাম সোহাগকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়।’ এ ছাড়া সোহাগ এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না বলেও দাবি করেন মামলার বাদী আজিজুল ইমাম চৌধুরী।
বিষয়টি নিয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘মামলাটি গুরুত্ব বিবেচনা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২২/২৩/২৪ ও ২৯ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মাহবুবুর রহমানকে প্রদান করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে স্বাক্ষর ও সিল ভুয়া শনাক্ত হলে আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে আসন্ন দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে রবিউল ইসলাম সোহাগ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তার এ জাল স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা প্রচার করে প্রার্থী হওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।